একটি লিঙ্গ
নির্ধারক ন্যারেটিভ
স্বপন। পেশায় ডাক্তার। গায়ের রং ফর্সা। বিড়ির নিয়মে ঠোঁটদুটো কালো। একটি
নামী সরকারী হাসপাতালে লিঙ্গ নির্ধারণ করে। যেদিন কারোর লিঙ্গ নির্ধারণ করতে হয়
না, সেদিন যৌন কবিতা লেখে ছেলেদের নিয়ে।
বাড়িটার উত্তর
কোণে যে জানলা-টা ছিল, তা দিয়ে বাতাস ঢুকতে বা বেরোতে পারত না। ধোঁয়া মাঝে মাঝে
‘ইউ’-টার্ন নিয়ে আসার চেষ্টা করত। তবে, সঙ্গী না পেয়ে ফিরে যেত। ধোঁয়া সঙ্গদোষে
দুষ্ট নয়। এই সূত্রে জানিয়ে রাখা ভালো যে বাড়ি, জানলা, বাতাস বা ধোঁয়া-এরা কেউই এই
গল্পের চরিত্র নয়, হতেও চায় না। এই উপাদানগুলো নিছক গল্পের দীর্ঘসূত্রতার
প্রস্তুতিও হতে পারে।
দীর্ঘ কয়েকমাস পর
সেদিন স্বপনের সাথে দেখা হল। বললাম- “কেমন আছিস?” তারপর একটা খারাপ খবর শুনলাম।
দিনকয়েক আগে একটি আকষ্মিক দুর্ঘটনায় স্বপনের জননাঙ্গ নষ্ট হয়ে গেছে। আইনগত ভাবে সে
তার নাম বদল করেছে। এখন সে স্বপ্না। বিড়ির নিয়মে ঠোঁটদুটো তার আজও কালো।
বাড়ির পশ্চিম
দিকের থাকার জায়গাটায় রোজ একাই শুয়ে পড়ত সে। শহরের এদিকে তেমনটাই হয়। একা থাকতে
হয়। বা,থাকতে গেলে একা হতে হয়। বিমর্ষ দূরবীন দিয়ে চোখের জ্যোতি ঢুকিয়ে নিয়ে
তাকাতে হয় সেখানে। তবেই ‘ন্যারেটিভ’ তৈরী হয়। প্রকাশক ও পাঠক সেটা খায় বা মাথায়
দেয়। ঠিক যেমনটা দিয়েছে বা এখন দিচ্ছে।
গতকাল স্বপ্না তার নিজের লেখা একটি বই প্রকাশ করেছে। ১ দিনে ৩০০ কপি বিক্রি
হয়েছে। বইটির নাম- ‘লিঙ্গডুবি’।
জাহাজের সাইরেনটা
বার তিনেক বেজেছিল। দক্ষিণমুখী হাওয়া বইছিল। তারা বলছিল, “আমাদের দাবী মানতে হবে,
মানতে হবে!” তারা ডান বা বাম- যে কেউই হতে পারে। তবে তাদের দাবী গণদাবী ছিল কিনা,
তা বিচার করার জন্য পাশের বাড়ির কালা-বোবা সরকার ‘দা’(বা,‘দি’)একটি তদন্ত কমিশন
গঠন করেছে। এখনকার মতো সংবাদ এখানেই শেষ করছি। এর বেশী ‘মাল’ তৈরী করা যায়নি। ওদিকে
আবার ‘ন্যারেটিভ’-এর কাজটাও বাকি আছে।